Ledis and Gentelman, আসেন একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। একটা সময়ে আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করতো, কেন সংগঠন করি, কেন থিয়েটার করি। তখন একটা ভালোলাগা থেকে করি বলে উত্তর দিয়ে দিতাম। এর বেশি কখনো চিন্তা করি নাই। কিন্তু ক্যেম্পাস ছাড়ার ১১ বছর পরে আমি এখন বুঝতে পারি কিসের টানে আমি থিয়েটারে নিজেকে জরিয়েছিলাম।
Outcome based education (OBE) এখন এক বহুল আলোচিত কনসেপ্ট। Traditional education system (TES) যেখানে একটা structured curriculum system এ রিজিড থাকে, OBE সেখানে flexible curriculum কে ওয়েলকাম জানায়। TES যেখানে Academic education এর উপর গুরুত্ব দেয়, OBE সেখানে সমসাময়িক learning process কে প্রাধান্য দেয়। TES system এ evaluation process হয় exam driven অপরদিকে OBE system এ evaluation হয় ongoing problem solving capacity দেখে। To recapitulate the whole words, In traditional system, teacher follows the syllabus as a rigid and non negotiatable way whereas outcome based education system allows teachers to be creative and innovative in designing their program.
বুঝতে কি একটু কস্ট হচ্ছে? আসেন, একটু ছোটবেলা থেকে ঘুরে আসি। আমার মেয়ের বয়স সাড়ে চার বছর। আমি ওকে নিয়ে নিয়মিত পড়তে বসি। একদিন বাংলা বই নিয়ে বসছি। ক এর পাশে একটা কলম এর ছবি দেখিয়ে বললাম, ক তে কলম। দেখছো মা, কি সুন্দর লাল রং এর একটা কলম। এটা হচ্ছে Traditional education system এর example. আমার মেয়ে আমার মুখে হাত দিয়ে আমাকে থামিয়ে বললো, বাবা, ক তে করোনা ভাইরাস। আমি গুড বলাতে সে উৎসাহ পেয়ে বলা শুরু করলো ক তে কিটক্যাট, কোক, প্যারোট (কাকাতুয়া)। এই যে সমসাময়িক ইনোভেটিভ example যেটা সিলেবাসের বাইরে থাকা সত্বেও accepted, এবং inspirational, এটা হচ্ছে Outcome based education এর example. এখন প্রশ্ন হচ্ছে কয়জন স্কুল টিচার ক এর পাশে কলম, কলা বা কাঠাল লেখা না দেখে বাচ্চারা সমসাময়িক যেই বিষয়বস্তু দেখছে বা শুনছে সেই উত্তর গ্রহন করার মানষিকতা রাখেন।
টাইটেল এর সাথে লেখার বিষয়বস্তু অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে মনে করে হতাশ হইয়েন না ভাই ও বোনেরা। আমি লাইনে আসছি। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো ঐ Traditional education system থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বের হতে পারে নাই। আর ঐ জন্যই আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ গ্রাজুয়েট বের হয় কিন্তু প্রোপোরশন ওয়াইজ অরিজিনাল রিসার্চার বের হয় না। প্রবলেম ধরিয়ে দেয়ার মতো হাজার লোক পাওয়া যায় কিন্তু প্রবলেম সলভ করার লোক পাওয়া যায় না। ব্রিলিয়েন্ট রেজাল্ট করে প্রভাশক হচ্ছে কিন্তু সেই মান্ধাতা আমলের সিলেবাস থেকে বের হতে পারে না। বড় বড় কম্পানির বস হচ্ছে কিন্তু যোগ্য লিডার হতে পারছে না। বিসিএস নামক এক মরিচিকার পিছনে ছুটছে কিন্তু একজন entrepreneurs হিসাবে হাজার মানুষের সপ্ন তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এভাবেই meritocracy নামক বিষয় থেকে আমাদের জেনারেশন ছিটকে বেড়িয়ে যাচ্ছি। এরকম আরো হাজার উদাহরন দেয়া যায়। তাই তো বলি সুধীসমাজ, চিন্তা করেন। শুধু চায়ের টঙে আর অনলাইন এর মোহময় জগতে ঝড় না তুলে চিন্তা করেন কিভাবে এই প্যরাডক্স থেকে বের হওয়া যায়। নাহ, আমিও পাড়ি নাই Traditional education system এর এই গোলকধাঁদা থেকে বের হতে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অতীতকে ধরে রাখার যে অযৌক্তিক কালচার কয়েক যুগ ধরে চলে আসছে তা ভেঙে নতুনকে বরন করে নেয়ার সাহস কয়জনের আছে? (এখানে বুঝতে হবে, অতীত কে ধরে রাখা আর অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া দুটি আলাদা কনসেপ্ট)। তবে আমি সংগঠন নামের একটা পরিপূর্ন সংবিধান বিশিষ্ট ভলেন্টিয়ার অর্গানাইজেশনের পার্ট হবার একটা সুযোগ পেয়েছিলাম। একটা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্টুডেন্ট কে যখন জীবনমুখি শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয় ঠিক তখন এসব সংগঠন তাদের পাশে এসে দাড়ায়। ওরা মানুষকে ভেঙেচুড়ে নতুন মানুষ তৈরি করে। ইন্দ্রিয় গুলোকে পিটিয়ে, শান দিয়ে চকচকে করে একটা group interest কে maximize করার জন্য personal interest কে বিসর্জন দিতে শেখায়। সর্বোপরি এরকম ছোট বড় শিক্ষনিয় বিষয় নিয়ে চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সংগঠনগুলো টিকে আছে আমাদের ভালোবাসা নিয়ে।
মোহতারামে হাজেরিন, এবার শুরু করি থিয়েটার কেন করবো। আমার মতে থিয়েটার একটা টিমওয়ার্ক। একটা টিমের সাথে ব্লেন্ড হয়ে কাজ করার মানষিকতা তৈরির আদর্শ প্লাটফরম। লাইট, সেট, মিউজিক, কস্টিউম আর ডায়লোগ মিলে যে মহাকাব্য একটা স্টেজে তৈরি হয় তা মনে হয় আর কোথাও পাওয়া যায় না। প্রত্যেকটা উপকরেনর সুক্ষ মিশ্রন একটা পারফেক্ট নাটকের জন্য অপরিহার্য। আর এই জন্যই গর্ভবতি বর্তমান নাটকের ৫০ মিনিট স্টেজে আমার ডায়লোগের বিচরন থাকলেও সবার মন কেড়ে নিয়েছিল পিছনে থাকা ফয়েজ আর হরির অদ্ভুত সামজস্যপূর্ন অঙ্গভঙ্গি। অথচ পুরো নাটকে তাদের একটা ডায়লোগও ছিল না। ভুল করা মানুষের সহজাত অভ্যাস। কিন্তু ভুলটাকে শুধরে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। এই ইম্প্রোভাইজেশন করার শিক্ষা থিয়েটার থেকে আর কে ভালো দিবে।
এবার একটা গল্প দিয়ে শেষ করি। হত্যার শিল্পকলা নাটকের ফ্লোর চলে কোন এক ছুটির দিনে। লান্চ ব্রেক। সবাই ভার্সিটি গেটে গেছে খেতে। আমি আর মামুন ভাই লাইব্রেরী বিল্ডিং এর সামনে ট্যংকির উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছি। এমন সময় আমার এক ক্লাসমেট সামনে দিয়ে বই ঝুলিয়ে চলে গেল গ্রুপ স্টাডি করতে। আমি মামুন ভাইকে বললাম, আচ্ছা ভাই, এই যে পড়াশোনায় কিছুটা ফাকি দিয়ে আমরা সংগঠনে সময় দিচ্ছি। লাভ কি? ভাই বলেছিল, শোন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পড়াশোনা করে তাদের হয়তো একটা সিকিউর ভবিষ্যত হবে। কিন্তু যারা পড়াশোনার পাশাপাশি সংগঠন করে তাদের ভবিষ্যতের সাথে সুন্দর একটা স্মৃতি থাকবে। আর বেঁচে থাকার জন্য কিছু মধুর স্মৃতি খুবই দরকার।
-জাহিদ হাসান
দিক থিয়েটার।